অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনাহারে মারা গেছেন আরও ১৪ ফিলিস্তিনি। অনাহারে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন শিশু। এছাড়া, ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি গাজায় খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরায়েল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করে, যা মে মাসে আংশিক তুলে নেওয়া হলেও এখনও সীমিত পরিমাণে ত্রাণ ঢুকতে পারছে। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর সতর্কতা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সাহায্য ঢুকতে পারছে না।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি জানান, গাজায় অবস্থানরত তার সহকর্মীরা মানুষজনকে এমন অবস্থায় দেখছেন যেন তারা “না বেঁচে আছে, না মরেছে; যেন হাঁটতে থাকা লাশ।”
জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, “শুধু ক্ষোভ বা নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে, দুর্ভিক্ষ রোধ করতে হবে এবং বন্দিদের মুক্ত করতে হবে।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কটল্যান্ড সফরের সময় সাংবাদিকদের বলেন, “গাজায় প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষ চলছে এবং এ অবস্থার জন্য ইসরায়েলের বড় ধরনের দায় রয়েছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই। তবে গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েল কাজ করছে।”
গাজার সরকারি সংবাদমাধ্যম জানায়, এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ৪০ হাজারের বেশি শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পড়ছে। এর কারণ গত ১৫০ দিনে ইসরায়েল শিশু খাদ্য ঢুকতে দেয়নি গাজায়।
সরকারি এক বিবৃতিতে সব সীমান্ত অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।