Connect with us

মতামত

অসুস্থ সমাজ ব্যবস্থা ও আমাদের দায়বদ্ধতা

Published

on

সোনার বাংলাদেশ অসুস্থ এক সমাজব্যবস্থায় বিভ্রান্তকর অচেনা জাতিতে রূপান্তরিত হচ্ছি দিনে দিনে। সমাজের চরম অবক্ষয়, সর্বস্তরে দুর্নীতি, প্রতারণার এক মহা প্রতিযোগিতা চলছেই। কোন কাজ করতে গেলে নির্দিষ্ট ফি এর পর অতিরিক্ত টাকা, যেটাকে ঘুষ বলা হয়, সেটা দিতেই হয়, না হলে কোন কাজ হয় না।এটা যেন একটা নিয়ম। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন প্রত্যয়ন পত্র নিতে গেলেও ! অনিয়মই নিয়ম মোদের এমন জন্মভূমি!

যেন প্রাথমিককেই হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে! এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক হয়ে গেল, মজার ব্যাপার হলো যে দিবে সেও জানে যে নেবে সে তো জানেই। শুধু মাঝখানে কিছুটা কম বেশি নিয়ে দর কষাকষি।এটা বোঝার জন্য বা প্রমাণ করার জন্য বিজ্ঞানী হতে হয় না।আপনি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলেই এর উত্তর বের হয়ে যাবে।


তাছাড়াও সমাজের আরো সর্বক্ষেত্রেই এই অধঃপতনের দৃশ্যমান চোখে পডার মত। একটা সময় ছিল মানুষ যখন দাঁড়িওয়ালা টুপিওয়ালা নামাজী মানুষকে খুব সম্মান করতো, বিশ্বাস করতো এবং ভালোবাসতো কিন্তু সেখানেও আজ ভেজালের রমরমা ব্যবসা শুরু হয়ে গেল। কিছু সুবিধাভোগী মানুষ এর মধ্যে ডুকে পডেছে। আগে এলাকাতে কোন মানুষ যদি প্রতারণা করতো, চিটিং করতো, তখন সবাই তাকে এক নামে চিনতো, এবং তার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতো।


আশ্চর্যের বিষয় হলো সময়ের ব্যবধানে তারা নিজেকে আরও আপডেট করে ফেলেছে। নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেছে।তারা ইসলামের বিভিন্ন লেবাস ব্যবহার করে।কথায় কথায় তাদের মুখে শুনবেন আলহামদুলিল্লাহ,মাশাল্লাহ, ইনশাআল্লাহ। এসব বলে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা। যার কারণে সত্যিকারের এমন ঈমানদার মুসলমানদের প্রতিও কিছু মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে।


আশ্চর্যের বিষয় হলো এই ধরনের মানুষ নিয়মিত নামাজও পড়ে মানুষকে দেখানোর জন্য। কিন্তু তাদের মূল প্রতারণা, ছলনার ব্যবসা ঠিক রেখে।এটা তাদের একটা ব্যবসায়ী কৌশল মাত্র।আর আমাদের দেশে যে পরিমাণ প্রতারক দাপ্পাবাজ দিন দিন বেড়েই চলছে তাতে আগামীর ভবিষ্যৎ
বিভ্রান্তকর জাতিতে রূপান্তরিত হবে নিঃসন্দেহে।

আজ সমাজে কেউ প্রতারণা করে, ছলনা করে, পরের হক (সম্পত্তি/টাকা) এবং আত্নীয়ের হক মেরে কখনো নিজেকে এক মিনিটের জন্য ও দোষী ফিল করে না।যেটা সত্যিই খুবই ভয়ঙ্কর এবং উদ্বেগের বিষয়। আজকের সমাজে একজন ধর্ষন করার পরেও নিজেকে কখনো দোষি ভাবেনা।মনে হয় যেন কোন পাপই করেনি,কোন অন্যায় করেনি। এরকম হাজারো উদাহরণ আমাদের সমাজে অহরহ।

মসজিদের কত ইমামের চাকরি চলে যায় শুধুমাত্র সুদ, ঘুষ, দূর্ণীতি এ ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে বয়ান দেয়ার কারণে।এগুলো আমাদের সমাজে অহরহ হচ্ছে ।সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে এক বিভ্রান্তকর এবং অসুস্থ পরিবেশ যেন কায়েম হয়ে যাচ্ছে। যেখানে অন্যায় করে নিজেকে কখনো অনুশোচনা করার প্রয়োজন মনে করে না।

প্রত্যেকে এলাকাতে দেখবেন কিছু নামধারী প্রতারক লেবাসধারী মানুষ থাকবে, যারা সব সময় এগুলো করে থাকে। আমাদের সমাজের এরকম মানুষদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল এটা মানুষ সারা জীবন প্রতারণা করল অন্যায় করল, ঘুষ, দুর্নীতি করলো কিন্তু যখন মরে যায় তখন সবাই বলে মাফ করে দেন। মানুষটা ভালো ছিল, এরকম বলার কারণে আরো বেঁচে থাকা দুর্নীতিবাজ গুলো এতে উৎসাহিত হয়। কারণ মানুষ যদি কোন দুর্নীতিবাজ চিহ্নিত অপরাধীকে যদি মৃত্যুর পর প্রত্যাখ্যান করত, তার জানাযা বর্জন করত, তখন বেঁচে থাকা দুর্নীতিবাজ অপরাধীগুলো অনেক ভয় পেত এবং তারা ভালো হওয়ার চিন্তা করত।

আমাদের দেশে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।এই ধরনের প্রতারকের সংখ্যা দেশের গুণটি পেরিয়ে এখন বিদেশেও পাড়ি জমিয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ২০১৪ সালে, আমি আর আমার এক কানাডিয়ান বন্ধু বাংলাদেশী এক প্রতারকের খপ্পরে পড়েছিলাম (লন্ডনে) এবং ভদ্রলোককে যতবারই কল দিতাম,ভদ্রলোক বলত যে আমি এখন নামাজ পড়বো বা নামাজের পরে আসবো, আমি এখন মসজিদে আছি।এমন ভাবে কথা বলতো আপনার বিশ্বাস না করে উপায় নাই । যার কারণে আমাদের বিরাট অংকের টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ।যাহোক সেটা অনেক ভিন্ন বিষয়। সেটা নিয়ে বলতে চাই না।মূলকথা হলো দুর্নীতিবাজরা এবং চিহ্নিত অপরাধীরা যদি


যদি মৃত্যুর পরে প্রত্যাখিত হতো তাদের সন্তানরা যদি নিজের চোখে দেখতো তাহলে হয়তো আমাদের সমাজের চিত্রটাই বদলে যেত এবং বেঁচে থাকা বাকি দুর্নীতিবাজ অপরাধীরা শিক্ষা নিত এবং তারা হয়তো ভালো হয়ে যেত ।এইসব কারণেই হয়তো আমাদের সমাজে চিত্রটা এখনো বদলাচ্ছে না ।তবে আমাদেরকে এই ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে ।আগামীর সোনার বাংলা গডতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে ।তা না হলে এ জাতি অতি শীঘ্রই দ্বিধা বিভক্ত জাতিতে রূপান্তরিত হবে যার খেসারত দিতে হবে বহুকাল……..( চলবে )

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

For Any Inquiry

dailybanglamirror@gmail.com

স্বত্ব © ২০২২ - ২০২৫ বাংলা মিরর | সম্পাদক : মোঃ খায়রুল ইসলাম সাব্বির