চুনারুঘাট উপজেলার গিলানি ছড়া ও সুতাং নদী থেকে সিলিকা বালু উত্তোলন ও পাচারকারী চক্রের মুলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকায় পুনরায় বালু লুটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গতকাল (১৩ অক্টোবর) যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৪ জন বালু পাচারকারীকে আটক ও পরবর্তীতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হলেও আড়ালে থেকে গেছেন মূলহোতারা । তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় আবারও বালু লুটের পায়তারা করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বদরগাজী এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ৪ নং পাইকপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ও ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু সায়েম, ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুর রউফ খান, ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন তালুকদার, সতং এলাকার শফিক দেওয়ান ও আফজাল খানের নেতৃত্বে গিলানী ছড়ার হলহলিয়া ও আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে চলে সিলিকা বালু পাচার। তাদেরকে বালুর টাকার বাহিরেও ট্রাক্টর প্রতি ৩ শ টাকা করে আলাদা চাঁদা দিতে হয়। অন্যথায় বালু বোঝাই ট্রাক্টর প্রশাসন দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকির পাশাপাশি চালকদেরকে মারধোর পর্যন্ত করে থাকেন।
নাঈম মিয়া নামে এক ট্রাক্টর চালক জানান, বদরগাজী, হলহলিয়াসহ আশপাশের এলাকা থেকে বালু আনতে গেলে তাদেরকে টাকা দিতে হয় তাদেরকে চাঁদা না দিলে কোন ভাবেই বালু আনা যায় না। তারা ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, গিলানী ছড়া এবং সুতাং নদীর বদরগাজি অংশ থেকে মেশিন ও শ্রমিক দিয়ে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ ঘনফুট সিলিকা বালু উত্তোলন করে পাচার করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে করে গত একবছরে এই চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। বিপরীতে চা-বাগান, পাহাড় ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে। ভেঙ্গে পড়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ফলে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বদরগাজি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, “সারারাত ট্রাক্টর দিয়ে বালু পাচার হয়। এতে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসনের অভিযানে শ্রমিকরা ধরা পড়েছে মুলহোতাদের না ধরলে বালু লুট বন্ধ করা যাবে না।”
বালু উত্তোলন ও পাচার বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”