চুনারুঘাট উপজেলার পানছড়ি গাধাছড়া থেকে অবাধে পাচার হচ্ছে মূল্যবান সিলিকা বালু। ইজারা না থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার করে কোটি টাকার বাণিজ্য করছে একটি চক্র। এতে করে পরিবেশ ও সড়কের ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডেওয়াতলী এলাকার শামসু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল মিয়া।
তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বালু মহাল ও পরিবেশ আইনে একাধিক মামলা হলেও কোন ভাবেই থামছে না তার তান্ডব। একসময় আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় থাকা মোজাম্মেল বর্তমানে খোলস পাল্টে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন বিএনপি নেতা হিসেবে। গত ১ বছরে অন্তত পাঁচ কোটি টাকার মূল্যবান সিলিকা বালু লুট করে নিয়েছে মোজাম্মেলের নেতৃত্বাধীন এই চক্র।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকার গাদাছড়া থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে একটি চক্র। বালু লুটে মোজাম্মেলের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন একই এলাকার মাহফুজ মিয়া, ফয়েজ মিয়া ও বশির মিয়া, বিল্লাল মিয়াসহ কয়েকজন। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করলে হামলা মামলার শিকার হতে হচ্ছে স্থানীয়দেরকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিনগর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চলাচলের রাস্তা। প্রতিবাদ করলে মারধরের হুমকি দেয় তারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গাদাছড়ার ৮ নং বস্তি এলাকায় মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে রাখা হয়েছে । উত্তোলিত এসব বালু রাতের আঁধারে ট্রাক্টর যোগে হবিগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন অবৈধ ডিপুতে পাচার করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন মোজাম্মেল ও তারা সহযোগীরা।
ডেওয়াতলী এলাকার নাঈম মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, প্রতি রাতে ৩০-৪০ ট্রাক্টর বালু পাচার হয়। এতে করে শায়েস্তাগঞ্জ-দেউন্দি সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বালু পাচারের বিষয়ে মোজাম্মেল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাহফুজ ও ফয়েজের কাছ থেকে বালু কিনে অন্যত্র বিক্রি করেন বলে দাবী করেন। এসময় তিনি তার ট্রাক্টর দিয়ে অবৈধ বালু পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন।