মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছাগল খেয়ে ফেলায় ১২ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় লোকজন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার বোবরথল (করইছড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। এঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা । আর ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি অজগর সাপকে হত্যার পর সেটিকে ঘিরে স্থানীয় লোকজন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পাশে একটি মৃত ছাগল পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সবার হাতে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে বোবরথল (করইছড়া) গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে একে একে ৫-৬টি ছাগল নিখোঁজ হয়। এলাকার লোকজন শুরুতে ধারণা করেছিলেন ছাগলগুলো হয়ত চুরি হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন দেখতে পান একটি বিশাল আকৃতির অজগর একটি ছাগল গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে লাঠি ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অজগরটিকে ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে সাপটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন।
দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, ‘শুনেছি বোবরথল (করইছড়া) গ্রামের লোকজনের কয়েকটি ছাগল খেয়ে ফেলে অজগরটি। ঘটনার সময় একটি ছাগল খাচ্ছিল সাপটি। সেটি দেখে স্থানীয়রা অজগর সাপটিকে মেরে ফেলেন।’
এ বিষয়ে স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাঈব আহমদ ইয়াসের বলেন, ‘বন্যপ্রাণী পরিবেশের অংশ। তারা আমাদের শত্রু নয়। একটি ছাগল খাওয়াকে কেন্দ্র করে অজগরের মতো একটি সাপকে পিটিয়ে মারা সত্যিই দুঃখজনক। এটি শুধু অমানবিক নয়, আইনগত অপরাধ।’
তিনি বলেন, ‘বনবিভাগের উচিত দুর্গম এলাকায় নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন করা। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনা থামানো সম্ভব হবে না।’
বনবিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. রেজাউল মৃধা বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়েছে। তারা ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
এবিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। এ ব্যপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।