Connect with us

দূর্নীতি

চুনারুঘাটে সক্রিয় সিলিকা বালু পাচারচক্র

| থামানো যাচ্ছে না সিলিকা বালু পাচার

Published

on

প্রশাসনের জোরালো অভিযান ও মামলার পরও থামানো যাচ্ছে না হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পানছড়ি এলাকা থেকে সিলিকা বালু পাচার। বর্তমানে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পূর্বে উত্তোলিত বালু রাতের আঁধারে পাচার করে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিন ভোরে ট্রাক্টরযোগে পাচার হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ গাড়ি বালু। এতে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের রাস্তা, অপরদিকে প্রশাসনের অভিযানের পরও বালু পাচার অব্যাহত থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

আরো দেখুন | বালু মাফিয়ারা এখনো অধরা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার পানছড়ি এলাকার গাদাছড়া থেকে দীর্ঘদিন ধরে সিলিকা বালু উত্তোলন ও পাচার করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। সম্প্রতি সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ হলেও এখন রাতের আঁধারে বিকল্প রুটে পাচার করা হচ্ছে বালু। প্রশাসনের নজর এড়াতে তারা ব্যবহার করছে গ্রামীণ সড়কগুলো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ মিয়া, তার ভাই মাসুক মিয়া এবং কালীনগর এলাকার শামীম মিয়া ও আমজত উল্লাহর তত্ত্বাবধানে বালু উত্তোলন করা হয়। উত্তোলিত এসব বালু ডেওয়াতলী এলাকার বিল্লাল মিয়া, শামীম মিয়া ও বশির মিয়ার মাধ্যমে পাচার হয়ে যাচ্ছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর এলাকার জুয়েল মিয়ার মালিকানাধীনসহ কয়েকটি অবৈধ ডিপোতে। সেখান থেকে ট্রাকযোগে বিক্রি করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়।

গত এক বছরে অন্তত ৫ কোটি টাকার সিলিকা বালু পাচার করেছে এই চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও বালুমহাল আইনে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও তারা দুঃসাহসিকভাবে একই কাজ করে যাচ্ছে।

আরও জানা গেছে, আগে পাচারের জন্য সরাসরি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ব্যবহার করলেও বর্তমানে রঘুনন্দন পাহাড়ের ভেতরের রাস্তা, লাদিয়া সড়ক, নিশাপট সড়ক ও শায়েস্তাগঞ্জ-দেউন্দি সড়ক ব্যবহার করছে পাচারকারীরা।

সাম্প্রতিক অভিযানে সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে বালু উত্তোলন ও পাচারের দায়ে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে, বেশ কয়েকটি বালুবাহী ট্রাক্টর ও ড্রেজার মেশিন জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া সাড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকার অর্থদণ্ড এবং ১ লক্ষ ১৪ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে। বালুমহাল আইনে ১৯ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে।
গত বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ আরও একটি বালুবাহী ট্রাক্টর আটক করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযান অবশ্যই প্রশংসনীয়। বালু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য রোধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে এবং চিহ্নিতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পাবে।”
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং পাচারের এক্সিট পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্বত্ব © ২০২৫ বাংলা মিরর | সম্পাদক : মোঃ খায়রুল ইসলাম সাব্বির