Connect with us

দূর্নীতি

ধরাছোঁয়ার বাহিরে গডফাদারেরা

| চুনারুঘাটে সিলিকা বালু লুটে জরিত

Published

on

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে পাহাড়ি ছড়া, চা-বাগান ও সংরক্ষিত বনের পাদদেশ থেকে অবাধে লুট করা হচ্ছে মূল্যবান সিলিকা বালু। ড্রেজার মেশিন ও শ্রমিকের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে পাহাড়ি টিলা, চা-বাগানের ছড়া, শ্রমিক বস্তি ও জনচলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি ভোগান্তি বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

প্রশাসন অভিযান চালালেও বালু লুটের মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে, চক্রটি প্রশাসনের কিছু অসাধু ককর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাসোহারা দিয়ে অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযানের খবর আগাম পেয়ে তারা সতর্ক হয়ে পড়ে, ফলে অভিযান ব্যর্থ হচ্ছে বারবার।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাঁধাছড়া, গিলানী ছড়া এবং সুতাং নদীর বদরগাজি অংশ থেকে ড্রেজার মেশিনে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ ঘনফুট সিলিকা বালু উত্তোলন হচ্ছে। এসব বালু রাতে পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থানে। অল্প সময়েই বালু ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। বিপরীতে চা-বাগান, পাহাড় ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আইয়ুব আলীর ছেলে জসীম উদ্দিনের নেতৃত্বে গিলানী ছড়ার হলহলিয়া, আব্দুল্লাহপুর ও সুতাং নদী এলাকায় চলছে বালু উত্তোলন। এ বালু ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে পাচারের দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় ফরহাদ মিয়া ও খয়ের মিয়া। প্রশাসনসহ অন্যান্য বিষয় দেখভাল করছে চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মারুফ মিয়া ও সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম শাকিলসহ একটি সংগঠিত চক্র। তারা উত্তোলিত বালু হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অবৈধ ডিপোতে সরবরাহ করে, পরে সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চুনারুঘাট উপজেলার হলহলিয়া, গিলানীছড়া, সুতাং নদী ও শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি এলাকার গাঁধাছড়া থেকে উত্তোলিত বালু বিশাল স্তুপ আকারে মজুদ রাখা হয়েছে। রাতের আঁধারে এসব বালু পাচার হচ্ছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর, চুনারুঘাটের শানখলা ও শ্রীকুটা এলাকার কয়েকটি ডিপোতে।


পাচারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক। আর শাকির মোহাম্মদ সড়ক, লাদিয়া সড়ক ও দেউন্দি সড়ক বালু পরিবহনের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বদরগাজি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, “সারারাত ট্রাক্টর দিয়ে বালু পাচার হয়। এতে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও বালু লুট বন্ধ হচ্ছে না।


বালু উত্তোলন ও পাচার বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার বন্ধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এদিকে রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে বদরগাজী এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৪ বালুখেকোকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ১ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।


স্থানীয়দের দাবী যারা ধরা পড়েছেন তারা চুনোপুঁটি। চক্রের মুলহোতাদের আইনের আওতায় আনা না গেলে বালু লুট থামানো দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে। তাই দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবী জানান তারা।

Exit mobile version