Connect with us

দূর্নীতি

চুনারুঘাটে মাদক সিন্ডিকেটের পাহারাদার ওসি

Published

on

ছবি | চুনারুঘাট থানা ওসি নুর আলম

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা, যেখানকার পাহাড়ি এলাকায় চা বাগান এবং প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠেছে একটি ভয়াবহ মাদক সিন্ডিকেট, যা সম্প্রতি উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের কেন্দ্রে। চুনারুঘাট থানার তৎকালীন অফিসারের পথেই হাঁটছেন বর্তমান ওসি নুর আলম। মাদক সিন্ডিকেটের হাত থেকে নেয়া হচ্ছে মাসোহারা।  এই ঘটনা স্থানীয় জনগণসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া টাকার বিনিময়ে ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলার আসামী আওয়ামী লীগের নেতাদের আটক করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

মাদক সিন্ডিকেটের শিকড়

চুনারুঘাট একটি সীমান্তবর্তী এলাকা, যার কারণে মাদক চোরাচালানকারীদের জন্য এটি একটি সুবিধাজনক ও নিরাপদ জায়গা। সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান এবং পাহাড়ি এলাকাগুলো মাদক পাচারকারীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। চুনারুঘাটের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদক চোরাচালান হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই সিন্ডিকেটের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এর সঙ্গে কিছু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের নামও জড়িত।

ওসি ও মাদক চক্রের সম্পর্ক

সুনামগঞ্জ সাল্লা থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগে তাকে ক্লোজড করা হয়েছিল। আওয়ামী সরকার পতনের পর চুনারুঘাট থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় নুর আলম কে, চুনারুঘাটে এসে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জয়ারি সিন্ডিকেট, মামলা বানিজ্য, সাধারণ মানুষদের হয়রানিসহ নানারকম অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। মাদক সিন্ডিকেটের হাত থেকে প্রতি চালানে জন্য মোটা অংকে টাকা নিয়ে থাকেন ওসি নুর আলম। এভাবেই ছড়িয়ে পরছে মাদক সারা জেলায়।

চুনারুঘাটে হত্যা, ধর্ষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে, সম্প্রতি ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার কারা হয় ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের মামলা থানায় না নিয়ে কোর্টে যেতে বলা হয় এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। কেউ বলছে ধর্ষকদের হাত থেকে মোটা অংকে টাকা নিয়েছেন ওসি নুর আলম। আদালতের নির্দেশে মামলা নথি ভুক্ত হলেও এখনো কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ।

পুলিশের ভেতরে মাদক ব্যবসার নেটওয়ার্ক


তবে শুধু ওসি নয়, এমনকি পুলিশ বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদেরও মাদক চক্রের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অনেক সময় পুলিশের সোর্স, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নামও উঠে এসেছে। মাদক ব্যবসা প্রভাবশালী এবং সুসংগঠিত হয়ে উঠেছে, যেখানে স্থানীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী, প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও সম্পৃক্ত রয়েছে। এতে সাধারণ জনগণ এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যেও বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন মানিক সরকার নামে আওয়ামী লীগের এক ইউপি চেয়ারম্যান।

জনগণের ক্ষোভ এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ


এই ঘটনা জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। চুনারুঘাটের সাধারণ জনগণ মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে মাদক নির্মুলে এবং সিন্ডিকেট নির্মুল করতে প্রশাসনে পক্ষ থেকে কোন ধরনের কার্যক্রম গ্রহন করা হচ্ছে না। স্থানীয়রা বলছেন মাদকে সাথে থানা পুলিশ জরিত থাকলে এই মাদক কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

চুনারুঘাটের মতো একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে মাদক সিন্ডিকেটের শক্তিশালী উপস্থিতি স্থানীয় জনগণের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুনারুঘাট থানার ওসির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে মাদক চক্রের সংযোগ তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার হতে হবে। এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র প্রশাসনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ নয়, বরং দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় সংকটও।

For Any Inquiry

dailybanglamirror@gmail.com
Exit mobile version