হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে স্কুল চলাকালিন সময় হাতের ঈশারায় ছাত্রীদের দেখিয়ে অশালিন টিকটক করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের অপরাধে সিয়াম মিয়া নামে এক শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১০ মে সিয়ামকে মৌখিকভাবে বহিস্কার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ দেওয়া হয়, স্কুল চলাকালিন সময় যেন তাকে আশপাশে দেখা না যায়। যদিও এখনও চিঠির মাধ্যমে তাকে বহিস্কারের বিষয়টি জানানো হয়নি।
বহিস্কৃত শিক্ষার্থী সিয়াম মিয়া শিবপাশা ইউনিয়নের যশকেশরী গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে। সে উপজেলার শিবপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিয়ামের একটি টিকটক ভিডিও গত ২৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে টিকটক করছে সিয়াম। এ সময় তার পাশ দিয়ে কয়েকজন ছাত্রী সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে। সিয়াম হাতের মাধ্যমে তাদেরকে ঈঙ্গিত করে নারীদের নিয়ে একটি অশালীন মন্তব্যে ঠুট মেলায়।
টিকটক ভিডিওটি ছড়িয়ে পরার পর সমালোচনার মুখে পড়েন সিয়াম। মন্তব্যের ঘরে অনেকেই তার বহিস্কার দাবি করেন।
গত ১০ মে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য সুমন চৌধুরী তার নিজ ফেইসবুক আইডিতে ওই শিক্ষার্থী বহিস্কারের বিষয় নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি উল্লেখ্য করেন, ‘শিবপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে নবম শ্রেণির একজন ছাত্র টিকটক করে এবং সেটি যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ বিষয়ে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক টিকটককারী শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার অর্থাৎ ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে এবং স্কুল চলাকালীন সময়ে তাকে স্কুলের আশেপাশে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী সিয়াম ও তার অভিভাবকদের উপস্থিতিতে উক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
দাতা সদস্য সুমন চৌধুরী বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য, শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার অভিভাবকসহ এক বৈঠকে ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ী ভাবে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ওই বিদ্যালয়ের আশেপাশে না আসার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তা রেজুলেশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’
এ বিষয়ে শিবপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন চৌধুরীর মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত থাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। লিখিতভাবে তাকে বহিস্কার কারা হবে কি-না সেটা পরবর্তীতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সভায় সিদ্ধান্তের পর বলা যাবে।’
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী সিয়ামের পরিবারের কারো কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে বহিস্কার করবে। ওই শিক্ষার্থীকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে স্কুলে না আসার জন্য। এখন পর্যন্ত চুড়ান্তভাবে চিঠি দিয়ে জানানো হয়নি।